কসমেটিকসের যত্ন
পার্টি হোক বা ডেট যে কোনও অকেশনে সাজসজ্জার জন্য কসমেটিকস অপরিহার্য।কিন্তু কসমেটিকসের মান বজায় রাখার জন্য সঠিকভাবে স্টোর করা খুবই জরুরি।কসমেটিকস দীর্ঘদিন ভাল রাখবেন কী করে?
নিজেকে সুন্দর করে তুলতে মেক আপের জুড়ি নেই। তবে আপনার সাধের প্রসাধনীগুলিরও প্রয়োজন কিছু পরিচর্যার।নিয়ম মেনে কসমেটিক স্টোর না করলে তা যেমন তাড়াতাড়ি খারাপ হয়ে যায় তেমনই ওই প্রডাক্ট ব্যবহার করাও শরীরের পক্ষে হানিকারক। তাছাড়া সুন্দর ভাবে গুছিয়ে রাখলে তাড়াহুড়োতেও আপনার প্রয়োজনীয় প্রডাক্টটি সহজেই খুঁজে পাবেন। চলুন জেনে নিই।
কী করবেন
প্রসাধনী ভাল রাখার জন্য শুকনো বা ময়শ্চার ফ্রি রাখা খুবই জরুরি। কারণ ময়শ্চার কসমেটিকসকে খারাপ করে দেয়। পাউডারড ব্লাশ কমপ্যাক্ট বা আইশ্যাডো বাতাসের আদ্রর্তার সংস্পর্শে এলে, বিক্রিয়ার ফলে এগুলি জমে গিয়ে সহজেই নষ্ট হয়ে যায়। এগুলি ব্যবহার করা ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। একই ভাবে ঠিক ভাবে না রাখলে লিপস্টিক ক্রিম আই শ্যাডো, আই লাইনার সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই কসমেটিক ভাল রাখার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন একটি ভাল মেক আপ বক্স। আজকাল বাজারে নানা ধরনের আধুনিক মেক আপ বক্স পাওয়া যায়। এই স্টোরেজ বক্সগুলিতে আই শ্যাডো থেকে শুরু করে আইব্রো টুইজ়ার রাখার জন্যও সুন্দর জায়গা করা থাকে। তাছাড়া শক্তপোক্ত হওয়ায় বক্সের ভিতরে থাকা কসমেটিকসও ভাল থাকে।
লিপস্টিক ভাল রাখার জন্য রেফ্রিজ়ারেটারে স্টোর করুন। কারণ অতিরিক্ত উষ্ণতা এবং আদ্রর্তায় লিপস্টিকে বিক্রিয়া ঘটায়। বাথরুমে কখনই লিপস্টিক রাখবেন না। জল, উষ্ণতা, আদ্রর্তায় লিপস্টিক সহজেই খারাপ হয়ে যায়। তাছাড়া গরমে লিপস্টিক সহজে নরম হয়ে ভেঙে যেতে পারে। লিপ পেনসিল ও কাজল পেনসিল ব্যবহার করার দশ মিনিট আগে রেফ্রিজ়ারেটারে রেখে দিন। এতে লিপ পেনসিল সহজে ভেঙে যাওয়ার প্রবনতা থাকবে না। লিপ পেনসিল কাটার জন্য ভাল সার্পনার ব্যবহার করুন। লিপস্টিকের গন্ধে পরিবর্তন হলে বা অতিরিক্ত চটচটে হয়ে উঠলে তা বর্জন করুন। লিপস্টিক সহজেই মুখে চলে যেতে পারে। যা শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। তাই এই ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
নেলপলিশ দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে চাইলে রোদ থেকে দূরে রাখুন। নেলপলিশ ব্যবহার করার সময় ফ্যান চালাবেন না। এতে নেলপলিশ তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। নেলপলিশ ব্যবহারের পর শিশির মুখ শক্ত করে আটকে রাখুন। নেল পলিশের মুখে নেলপলিশ জমে শক্ত হয়ে থাকলে রিমুভার দিয়ে নেলপলিশের শিশির মুখ এবং ঢাকনা মুছে নিন। এতে নেলপলিশ অনেকদিন ব্যবহার করতে পারবেন।
অন্যান্য প্রডাক্টের মতো মেক আপ ব্রাশের যত্ন নেওয়াও অত্যন্ত জরুরি। ব্রাশে যেন আই শ্যাডো বা ব্লাশার লেগে না থাকে। ব্যহারের পর মাইল্ড শোপ দিয়ে আলতো হাতে ব্রাশ ধুয়ে ফেলুন। এয়ার ড্রাই করে মেক বক্সে স্টোর করুন।
জরুরি টিপস
কসমেটিক সবসময় নামী কোম্পানির কেনা উচিত। কারণ মুখের ত্বক, চোখ, ঠোঁটের ত্বক শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় অনেক বেশি সংবেদশীল। তাই কসমেটিকসের মান ভাল না হলে তা ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।কসমেটিক কেনার সময় অবশ্যই এক্সপেয়ারি ডেট দেখে নিন। লিপস্টিক, কমপ্যাক্ট ইত্যাদি বিউটি প্রডাক্ট সাধারণত এক থেকে দু’বছর ব্যবহার করা যায়। ডেট পেরিয়ে গেলে প্রসাধনী বর্জন করুন। যাঁরা কম সাজগোজ করেন তাঁরা অনেকসময় আইশ্যাডো বা ফাউন্ডেশন ইত্যাদি কিনে ফেলে রাখেন বা অনেকদিন ধরে ব্যবহার করেন। এই অভ্যাস বদলাতে হবে। যেকোনও বিউটি প্রডাক্ট ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ডেট চেক করুন। এছাড়া চেষ্টা করুন যে সমস্ত প্রসাধনী রোজ ব্যবহার হয় না সেগুলের ছোট ফাইল কিনতে। যেমন আই শ্যাডোর টুয়েলভ শেডস না নিয়ে টু শেডস বা ফোর শেডসের বক্স কিনতে পারেন। ফুরিয়ে গেলে আবার কিনুন। নতুন কোনও ধরনের ফেস ক্রিম যেমন, বিবি ক্রিম, ফাউন্ডেশন, সানস্ক্রিন ইত্যাদি নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার আগে কনুইয়ের কাছে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দেখুন আপনার ত্বকের জন্য সুট করছে কিনা। কিছু ধরনের ক্রিম থেকে অনেকের ত্বকে অ্যালার্জি বা র্যাশ বেরতে পারে। যদি কোনও সমস্যা না হয় তাহলেই প্রডাক্টটি কিনুন। আপনি যতই ক্লান্ত থাকুন না কেন, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে অবশ্যই ভাল ভাবে মেক আপ তুলে নিন। কারণ মেক আপ থেকে গেলে ত্বক ঠিক মতো শ্বাস নিতে পারে না, রোমকুপের পথ আবদ্ধ হয়ে থাকে যার ফলে ত্বকের খুবই ক্ষতি হয়।