ল্যাপটপের যত্ন
ওয়ার্ক ফ্রম হোমের যুগে ল্যাপটপই আমাদের প্রাণভোমরা! তাই এই অত্যন্ত প্রয়োজনায় গ্যাজেটটির যথাযথ যত্ন নিন।
কী করবেন
ল্যাপটপের অন্যতম প্রধান শত্রু ধুলোময়লা। ল্যাপটপে অতিরিক্ত ধুলো জমা হলে ল্যাপটপ সহজেই গরম হয়ে য়ায়। এছাড়া ল্যাপটপে ক্রমশ ময়লা জমতে থাকলে আরও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ল্যাপটপ যতটা সম্ভব পরিচ্ছন্ন রাখুন। তবে ল্যাপটপ পরিষ্কার করার সময় সতর্ক থাকা দরকার। ঘষাঘষি করে পরিষ্কার করতে গেলে কিন্তু হিতে বিপরীত হবে। ল্যাপটপ পরিষ্কার করার জন্য প্রথমেই পাওয়ার অফ করে নিন। ল্যাপটপের আলগা ধুলো পরিষ্কার নরম সুতির কাপড় দিয়ে মুছে নিন। কিবোর্ড পরিষ্কার করার জন্য কিবোর্ড পরিষ্কার করার উপযোগী ব্রাশ ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া কমপ্রেসড এয়ার ক্যানও ব্যবহার করা যায়। কিবোর্ডে ময়লা খুব বেশি থাকলে হোয়াইট ভিনিগারে মাইক্রোফাইবারের কাপড় ডুবিয়ে আলতো করে মুছে নিন। নতুন ল্যপটপ কেনার সময় কিবোর্ড প্রোটেক্টর লাগিয়ে নিন। ল্যাপটপ টাচ স্ত্রিন হলে অবশ্যই স্ক্রিন প্রোটেক্টর ব্যবহার করুন। কখনও ল্যপটপ জল বা গ্লাস ক্লিনার দিয়ে মুছবেন না।
ল্যপটপ খুব তাড়াতাড়ি গরম হয়ে যায়। তাই ল্যাপটপের এয়ারভেন্ট যাতে পরিষ্কার থাকে সেদিতে খেয়াল রাখুন। মাঝেমধ্যে নরম ব্রাশ দিয়ে ভেন্ট পরিষ্কার করুন। খুব গরম জায়গা, হিটার কিংবা রান্নঘরের কাছাকাছি ল্যাপটপ না রাখাই ভাল। বন্ধ গাড়ির তাপমাত্রাও বেশি থাকে। তাই গাড়িতে দীর্ঘক্ষণ ল্যাপটপে ফেলে রাখবেন না। বিছানায় বা বালিশের উপর ল্যাপটপ রেখে ব্যবহার না করাই ভাল। অনেক ল্যপটপেরই নীচের দিকে এয়ার ভেন্ট থাকে। বিছানায় ল্যাপটপ ব্যবহার করলে তাপ বেরতে পারে না এবং ল্যাপটপের ক্ষতি হয়। চেষ্টা করুন ল্যাপটপ টেবল বা সমান কোনও জায়গায় রেখে ব্যবহার করতে।
ল্যাপটপে কাজ করার সময় চা, কফি বা ঠান্ডা পানীয় থাকলে সাবধান থাকুন। ল্যাপটপে অনেক ছোট ছোট যন্ত্রাংশ থাকে। অসাবধানে তরল পদার্থ ল্যপটপে পড়ে গেলে এই পার্টসগুলির ক্ষতি হতে পারে। শর্ট সার্কিট হওয়াও অসম্ভব নয়। একই ভাবে খাবার খেতে খেতে ল্যাপটপে কাজ করা উচিত নয়। প্রথমত হাতে লেগে থাকা খাবার কিবোর্ডে ক্রমশ জমতে থাকলে কিবোর্ড সহজেই নোংরা হয়ে যেতে পারে। টাচ প্যাড পরিষ্কার শুকনো হাতে ব্যবহার করুন। ভিজে হাতে টাচ প্যাড ঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে।
ল্যাপটপ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার সময় ডিসপ্লে ধরে তুলবেন না। ল্যাপটপের নীচের অংশ ধরে সরান। কারণ ল্যাপটপের নীচের অংশের ভার বেশি থাকে। তাই সবসময় ডিসপ্লে ধরে সরালে ল্যাপটপের জয়েন্ট আলগা হয়ে যেতে পারে। ল্যাপটপের উপর মোটা বই বা ভারী কিছু রাখবেন না। এতে ডিসপ্লে বা কিবোর্ডের ক্ষতি হতে পারে।
ল্যাপটপে কাজ হয়ে গেলে ডিসপ্লে ইউনিটটি বন্ধ করে রাখুন। এতে ল্যাপটপ অযথা ময়লা হবে না। অনেকে আবার ডিসপ্লে কিছুটা নামিয়ে স্ট্যান্ডবাই মোডে রেখে দেন। এক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। কিবোর্ডের উপর পেন, পেনসিল, হেডফোন ইত্যাদি যেন না থাকে। এতে ডিসপ্লে হঠাৎ বন্ধ করে দিলে মনিটরের ক্ষতি হতে পারে।
ল্যাপটপ সারাতে দেওয়ার আগে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলির ব্যাকআপ অবশ্যই নিয়ে রাখুন। হঠাৎ করে ল্যাপটপ খারাপ হলে অনেক সময় ফরম্যাট করে দিতে হয়। তাই সাবধান থাকা দরকার।
ল্যাপটপ নিয়ে ট্র্যাভেল করার সময় ল্যাপটপ কভার এবং উপযুক্ত ল্যাপটপ ব্যাগ ব্যবহার করুন। এতে ধুলো, ময়লা, স্ক্র্যাচ বা হঠাৎ আঘাত লাগা থেকে ল্যাপটপ নিরাপদ থাকবে।
ল্যাপটপে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। নানা ধরনের ওয়েব পেজ খোলা, পেনড্রাইভে ফাইল ট্রান্সফার করা ইত্যাদি নানা কারণে ল্যাপটপ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। ভাইরাস গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করা, সফটওয়্যারের ক্ষতি করা সহ নানা বিপদ ডেকে আনতে পারে। অনলাইনে ফ্রি অ্যান্টিভাইরাসও পাওয়া যায়। তবে সেগুলো ইনস্টল করার আগে ভাল করে সেই সম্পর্কে জেনে নিন। অনেকসময় এইধরনের অ্যান্টিভাইরাসেও ভাইরাস থাকে।
বছরে একবার কোনও নির্ভরযোগ্য সার্ভিস সেন্টার থেকে ল্যাপটপ সার্ভিসিং করিয়ে নিন। এতে ল্যাপটপ অনেকদিন ভাল থাকবে।